ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ | বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১৯৭০ সালের ২২ এপ্রিল শুরু হয়েছিল মূলত পরিবেশ সংরক্ষণে মানুষকে অভহিতকরণ এবং উদ্বুদ্ধ করা এ দ্বিবিধ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। বিগত ২৪ বছরে আর্থ ডে বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের রূপ পরিগ্রহ করেছে। এখন EARTHDAY.ORG এর সমন্বয়ে ১৯৪ টি দেশে ১ বিলিয়নের ও বেশি মানুষ এতে যুক্ত। কর্মসূচির ব্যাপ্তি ঘটেছে বিপুলভাবে তবে বিশ্ব কতটুকু পেয়েছে তা নিয়ে সংশয় আছে। গ্রীনহাউজ গ্যাস উদগীরণ যা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে চীন, ব্রাজিল, আমেরিকা এবং দ্রুত শিল্পায়ন ঘটছে এমন সব দেশ দেদারছে কয়লা, গ্যাস, খনিজ তেল ব্যবহার করে বায়ুমণ্ডলে গ্রীনহউসে উদগীরণ এবং আর ঘনত্ব বাড়ানোয় ক্ষেত্রে বিরূপ অবদান রাখছে। মধ্যপ্রাচ্যের তেল উৎপাদনকারী ধনী দেশগুলো, রাশিয়া, ইরান, ভারত, ভেনেজুয়েলাসহ আরও বেশ কিছু দেশ তেল ও কয়লার বিকল্প শক্তি উদ্ভাবন ও সৌর শক্তি ব্যবহারে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
তবে,জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করতে, এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া কমিয়ে আনতে বা রোধ করতে, সহনীয় মাত্রায় আনতে নানা মুখী প্রচেষ্টা, পরিকল্পনা, সহযোগিতা এ সব চলতেই আছে। কয়েক দশকের চেষ্টা এবং সচেতন মানুষ, সংগঠন, রাষ্ট্রযন্ত্র, আন্তর্জাতিক উদ্যোগ এসবের সম্মিলিত ফলাফলে বেশ কিছু দুর্যোগ এড়ানো সম্ভব হয়েছে। নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকার মতে জলবায়ু ইস্যুতে অগ্রগতি প্রশংসা করার মতো। দশ বছর পূর্বে যা অচিন্তনীয় ছিল তা এখন বাস্তব রূপ নিতে শুরু করেছে, অনেক ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্যের মুখ দেখেছে।
পত্রিকাটির ভাষ্য মতে, Climate-friendly advances that would have seemed impossible even 10 years ago are now common place. And three times in the past 50 years humanity has faced- and fixed- massive, man-made global environmental issues.(Elizabeth Weise, For Earth Day 2024, experts are spreading optimism- not doom. USA TODAY, Apr.22, 2024).
অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন এখনো সুদূর পরায়ত মূলত আন্তঃ রাষ্ট্রীয় সহযোগিতার অভাবে। করোনা মহামারী, বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিশেষত ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ, ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষ, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ইত্তাকার ঘটনায় বিপর্যস্ত এসময়ে আমাদের বিশ্ব।
যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু বিষয়ে দুর্দিন কাটিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন যে মুহূর্তে বেগবান উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত ছিল সে মুহূর্তে কট্টর জলবায়ু পরিবর্তন বিরোধী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও তার দল ইস্যুটির বিরোধিতায় আদাজল খেয়ে মাঠে নেমে যায়। তা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়টিকে দারুণ গুরুত্ব দিচ্ছেন। জুতসই প্রযুক্তি ব্যবহারে শুধু আগ্রহ দেখাচ্ছেন তা নয় অনেক প্রযুক্তির ব্যবহার পূর্ণ উদ্যমে শুরুও করেছেন।
সৌরশক্তির ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করে চলেছে। ইলেক্ট্রিসিটি ব্যবহারে কার ও অন্যান্য যানবাহন যুক্তরাষ্ট্রে এখন সবখানে দেখা যায়। ফসিল জ্বালানি থেকে উত্তরণ জোরেশোরে চলছে। গ্রীন টেকনোলজি এখন শুধু শ্লোগান নয়, রাজইতিক কৌশল ও নয়। অনেক দেশে এ ধারনা থেকে জলবায়ু পরিবর্তন ক্ষেত্রে জনতার আন্দোলনের রূপ পরিগ্রহ করেছে। এ বছরের আর্থ ডে শ্লোগানে প্লাস্টিক থেকে বিশ্ব যাতে রেহাই পায় এ শ্লোগানটি ধারণ করেছে। খুবই যুক্তিযুক্ত।
বাংলাদেশে প্লাস্টিক যত্রতত্র ফেলার কারণে বুড়িগঙ্গা, কর্ণফুলী এ সব গুরুত্ব পূর্ণ নদী দ্রুত অনাব্য হয়ে যাচ্ছে। অবশ্য অপরাপর কারণ ও আছে। চট্টগ্রামের মত সুন্দর নগর, সামুদ্রিক বন্দ, নগরে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা প্লাস্টিকের কারণে জলাবদ্ধ নগরীতে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর দৃষ্টিনন্দন পাহাড়, পর্বত, নদী, সমুদ্র, সি বিচ , পার্ক, এমনকি হিমালয় পর্বত, এভারেস্ট গিরিশৃঙ্গ প্লাস্টিক দূষণে ভারাক্রান্ত। এ উপদ্রব, জলবায়ু পরিবর্তনে আর অনেক কারণের মতো মনুষ্য সৃষ্ট। আল্লাহ আমাদের হেদায়েত করুন।
Posted ২:০৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh